সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) মো. রাকিবুর রহমান রকিব
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মারা যাওয়ার ১০ বছর পর নির্মাণ করা হচ্ছে ছায়েদ মিয়া নামের কথিত এক পীরের মাজার। উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা গ্রামের পশ্চিমপাড়া বন্দেরবাড়ি এলাকায় সরাইল-বিটঘর-পানিশ্বর কাঁচা সড়কের পাশে পর্দার আড়ালে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা মাজার। এ নিয়ে এলাকার আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতার মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ও স্থানীয় এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত ১০ বছর আগে সৈয়দটুলা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মরহুম মহররম মিয়ার পুত্র ছায়েদ মিয়া আনুমানিক ৭০ বছর বয়সে স্বাভাবিকভাবে মারা যান। মারা যাওয়ার আগে ছায়েদ মিয়া পেশাগতভাবে তেমন কিছু না করলেও বিভিন্ন এলাকাঘুরে তাওলা করে কারও মতে ভিক্ষা করে চাউল এনে হত দরিদ্র সংসার চালাতেন। তাওলা করতে যাওয়ার সুবাধে বিভিন্ন এলাকায় তার কিছু ভক্তবৃন্দ সৃষ্টি হয়েছে। রাতের বেলায় নিজের ছোট টিন শেডের ঘরে বেহালা বাজিয়ে সুরের মূর্ছনা তুলে তিনি গান গাইতে দেখা গেছে। মারা যাওয়ার পর তার এক নারী ভক্ত সরাইল-বিটঘর-পানিশ্বর কাঁচা সড়কের পাশে সরকারি খাসের জায়গায় তাকে কবর দেন এবং সেখানে তিনি বসতঘর নির্মাণ করে কথিত পীর ছায়েদ মিয়ার মাজার বানাতে চেষ্টা করেন। এ সময় এলাকার আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতার বাধার মুখে মাজার নির্মাণ করা বাদ দিয়ে সেই বসতবাড়ি মরহুম ছায়েদ মিয়ার সন্তানদের কাছে মৌখিকভাবে বিক্রি করে সেখান থেকে সেই নারী ভক্ত চলে যান।
সম্প্রতি সেই নারী ভক্ত ও অন্যান্য কিছু সংখ্যক লোক সংঘবদ্ধ হয়ে গোপনে ১০ বছর আগে মারা যাওয়া সেই কথিত পীরের পাকা মাজার বানানো শুরু করেন। এ ব্যাপারে কথিত পীর ছায়েদ মিয়ার পুত্র মুরাদ মিয়া বলেন, আমাদের এলাকার বাইরের কিছু লোক এখানে এসে আমার বাবার পাকা মাজার নির্মাণ করা শুরু করেছেন। আমাদের পরিবারের কেউ মাজার বানানোর সাথে জড়িত নয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় রায়হান হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি ইলিয়াস সাহেব বলেন, ছায়েদ মিয়া এলাকার অতি সাধারণ লোক ছিলেন। পীর হওয়ার মতো কোনো আলামত তার মাঝে ছিল না। বিগত ১০ বছর আগে ছায়েদ মিয়া মারা যাওয়ার পর কিছু সংখ্যক লোক ওই সময় তার মাজার বানানোর পাঁয়তারা করেছিল। স্থানীয় আলেম-ওলামা, এলাকার মুরব্বী ও যুবকদের সাথে নিয়ে আমরা বাধা দেওয়ায় তখন মাজার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পর ফের কথিত পীরের মাজার নির্মাণ করা শুরু হয়েছে শুনতে পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়েছি। এলাকার সবশ্রেণি পেশার লোকদের সাথে নিয়ে কথিত পীর ছায়েদ মিয়ার নামে কোনো মাজার হতে দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
